প্রথম সরকারের ইতিকথা PDF Download❤️

দেখে নিন প্রথম সরকারের ইতিকথা pdf link-

prothom sorkarer ithikotha pdf 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার[সম্পাদনা]

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সরকার। এই সরকার দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা জারি করে, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সংবিধান প্রণয়ন করে এবং মৌলিক নীতিমালা হিসাবে সমতা, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতি প্রতিষ্ঠা করে। এর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ এবং সামরিক সর্বাধিনায়ক ছিলেন এম এ জি ওসমানী। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং মুহাম্মদ মনসুর আলী। নবনির্মিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এর সদস্যগণ এবং পাকিস্তানের সিভিল সার্ভিসের স্বপক্ষত্যাগী সদস্যদের সমন্বয়ে এই সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী এবং রেহমান সোবহান এর নেতৃত্বে এটি একটি সুদক্ষ কূটনৈতিক সংগঠনও ছিল। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এগারোটি সেক্টর কমান্ডারের মধ্যে বিভক্ত ছিল; যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশারফ,কে.এম. শফিউল্লাহ প্রমুখ।[৭৫][৭৬] অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য ভারত আন্তরিকভাবে সকল ধরনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা প্রদান করে। নির্বাসিত এই সরকারের রাজধানী ছিল কলকাতা। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত চূড়ান্ত যুদ্ধের দুই সপ্তাহের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে পাক সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ নিশ্চিত করে।

প্রথম সরকারের ইতিকথা – শেখ মুজিব প্রশাসন

বামপন্থী দল আওয়ামী লীগ যারা ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে জিতেছিল, বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর প্রথম সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১লা জানুয়ারী বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত হন এবং ব্যাপকভাবে দেশটির স্বাধীনতার নায়ক এবং জাতির পিতা হিসেবে গণ্য হন।[৭৭] তার শাসনামলে বাঙালী জাতীয়তার গঠন ছিল মূলত ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে। ১৯৭২ সালে কামাল হোসেন এর রচিত সংবিধানটি মূলত একটি উদার গণতান্ত্রিক সংসদীয় প্রজাতন্ত্র গঠন করে, যার ওপর সমাজতন্ত্রের কিছুটা প্রভাব ছিল।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, মুজিব এবং ভারতীয় প্রধাণমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ২৫-বছর মেয়াদী ইন্দো-বাংলাদেশী বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তি চুক্তির স্বাক্ষর করেন। আমেরিকান ও সোভিয়েত নেতাদের সাথে আলোচনা করার জন্য ওয়াশিংটন ডিসি ও মস্কোতে মুজিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ১৯৭৪ সালের দিল্লী চুক্তিতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং শান্তির জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করে।[৭৮] এই চুক্তিটি পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালী কর্মকর্তাদের এবং তাদের পরিবারদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত করে। তার পাশাপাশি ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পথ প্রশস্ত করে।

স্থানীয়ভাবে, মুজিবের শাসনামলে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান হয়ে ওঠে। প্রতিক্রিয়াশীল সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ এর একটি বিদ্রোহ ছিল, পাশাপাশি বাণিজ্যগোষ্ঠী এবং রক্ষণশীল শক্তিবর্গের একটি আন্দোলন ছিল, যারা মনে করত আওয়ামী লীগ সমগ্র মুক্তি আন্দোলনের মুনাফা একচেটিয়াভাবে গ্রহণ করে। বিক্ষোভ দমনের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে তিন মাসের জরুরী অবস্থা জারি করেন। তিনি জাতীয় রক্ষী বাহিনী গঠন করেন, যা মানবাধিকার অপব্যবহারের ব্যাপারে অভিযুক্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনেকেও জাতীয় রক্ষী বাহিনী দ্বারা অসন্তুষ্ট হয়েছিল। [৭৮]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *