বনানী কবরস্থান বই pdf (ডাউনলোড)
bonani koborsthan book info
◑নাম: বনানী কবরস্থান
◑লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
◑জনরা: থ্রিলার pdf
◑প্রচ্ছদ: মাসুদ হোসেন
◑প্রকাশনী: শিখা
◑প্রথম প্রকাশ: বইমেলা ২০২২
◑পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৬০
◑মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০/-
বনানী কবরস্থান বই রিভিউ
আসসালামু আলাইকুম “বনানী কবরস্থান” – কাইকর book by Abdullah AL Mamun.
রিভিউ না বলে বলি , মনের সুপ্ত রস নিংরানো ভাব প্রকাশ বললে প্রশান্তি লাভ হবে।
বইটি একটি সাইকো থ্রিলার উপন্যাস।
আমি আমার কুড়ি বছর বয়সে কখনো সাইকো থ্রিলার উপন্যাস পড়ে হাসবো বা মজা পাবো ভাবি নি। কল্পনাও করতে পারিনি বই টা এমন পাতায় পাতায় বিভিন্ন ধরনের অনুভূতির সম্মুখীন করবে আমাকে। ২০ টা অধ্যায়ে বিভক্ত করে বনানী কবরস্থান গল্প টা লিখা হয়েছে। লেখক খুব যন্ত করে একের পর এক সাজিয়েছেন অধ্যায় রূপে। ১৫৯ পৃষ্ঠা যেনো লেখা সাথে ছবি ভেসে তুলেছে মনে।
এই এক পাতায় হাসছি মুচকি ত অপর পাতায় মনে হচ্ছে গল্প আমায় গ্রাস করেছে আমি গল্পের ভেতর ডুবে গেছি…
কি হবে আলোর , পুলিশ কি লাশ দেখতে পাবে কি না? আদোও লাশ টা নিয়ে আলো কি করবে? আর ভালোবাসার স্বামীর লাশ কেনোই বা কবর হলো না!?
আর পুলিশ দাওয়াত করে আত্নহত্যায় বা কেনো করলো?
মনে শেষ অব্ধি বিষ্ময়সূচক আর প্রশ্নবোধক হয়ে বিধে ছিলো।
প্রতি টা চরিত্র যেনো বাস্তবে কথা বলছে যেনো কানে ভাসছে ৩ ঘন্টার সিনামার মতো।
একটা কবরস্থান , বনানী কবরস্থান।
বইয়ের নাম। বনানী কবরস্থান। কাইকরের করুণ আবিস্কার।
চানু বললো , “ঐ হানে বড়োলোকদের কবর তাই না?’
লোকটা হেসে বললো , ” হুমম
চানু কৌতুহলী কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো ,
‘সবচেয়ে বেশি বড়লোকের কবর কোনহানে ? জানেন আপনি?
লোকটা খানিক হেসে বললো , সবচেয়ে বড়লোক কে তা বলা মুশকিল। বলতে পারবো না সঠিক। কিন্তু আপনি শুনে কি করবেন?
চানু লজ্জা পেলো। লোকটা চানুর লজ্জা পাওয়া দেখে অবাক হয়ে ,
জিঙ্গাসা করলো , ‘বলুন। কি দরকার’?
চানু লজ্জা গলায় কাশি দিয়ে বললো আমারও তো এই কবরস্থানে চল্লিশ দিন পর কবর হইবো তাই। বেশি বড়লোক যেইহানে ঐ হানে কবর হইবো।’
লোকটা হাসবে না-কি কী বলবে বুঝতে পারছে না। পাশেরজন চানু মিয়াঁর কথাবার্তা শুনে হা করে তাকিয়ে আছে। চানু মিয়াঁ বললো , – এই কয়দিন ভালো থাকেন। দেখা হইবো। মাটি দেওনের দাওয়াত রইলো। আমার কবরে মাটি দিয়েন। আসি। ভালো থাইকেন।
চানু মিয়াঁ চয়নের লাশ বনানী কবরস্থান এ দাফন করতে পারে নি বরং শুনেছে সে গরীব মানুষ তার কবর এখানে হবে না তাকে বিক্রি করলেও এই কবরের দাম হবে না।
– এটাই তার আঘাতের কারণ। সাইকো লোকের কখন কিসে খারাপ লাগে বলা মুশকিল। কখন কি নিয়ে কোন বয়সে তাদের ঝোঁক শুরু হবে তা বলা যায় না।
চানুর তাই শখ হয়েছে বড়লোক হয়ে জন্মায় নি , বড়লোকের সাথে উঠতে – বসতে , খাইতে পারেনি। তাই সে মরার পর ঘুমাবে এক সাথে বড়লোকদের পাশে। পঁয়তাল্লিশ লাখ টাকা যোগাযোগ করতে পারলেই কবর হবে। যে স্ত্রী বেদানাকে কখনো মারেনি এই টাকার জন্য মেরেছে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। মানুষ সাইকো হলে তার হিতাহিত ঙ্গান থাকে না তার ই জলজ্যান্ত প্রমাণ।
প্রত্যান্ত এলাকার মানুষ বা গরীব মানুষের বিশ্বাস তাবিজ কবিরাজ বেদানা বেগম চানুর স্ত্রীও অন্ধ ভক্ত কবিরাজের। কবিরাজ নানু ফকির বেদেনার ফকির বাবা। চানু আর বেদেনার ছেলে আরিফ সাত দিন পনের দিনের জন্য হারায়ে যায় একা একায় আর বেদেনার ফকির বাবা বলেছে আরিফ কে নাকি কালো যাদু করেছে তা সাত আসমান এ গিয়ে কালো যাদু নষ্ট করতে হবে।
– আজও এমন বিশ্বাসী মানুষ দুনিয়ায় আছে ভাবতেই অবাক লাগছে। হয়ত অবাক লাগার কিছুই নাই এমন অনেক মানুষ বাংলার আনাচে-কানাচে তে আছে।
যে লাশ নিয়ে চানুর বানানী কবরস্থান এ ঘুমানোর শখ সেই লাশ আলোর স্বামী চয়নের। যে স্বামী বউ কে এতটায় ভালোবাসে যে তাকে চোখের আড়াল করতে হবে বলে চাকরি না করে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে বাসায় বসে , সে স্বামীর ভালোবাসায়ও কমতি থাকতে পারে? বউ কে ঠকাতে পারে?
চয়ন আলোকে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেছে। প্রেম করার সময় , যে প্রেমিক চুমু ত দূর হাত ধরতে ঘেমে মাটিতে লুটিয়ে পরে সে প্রেমিক অন্য কারো প্রতি আসক্ত কি করতে হতে পারে?
হয়ত পারে। আর পারে বলেই আলো কষ্ট আর ঘৃনা নিয়ে লাশ কবর না দিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভালোবাসা পৃথিবীতে সস্তা হয়ে গেছে। গল্পের শেষ পাতা আউরে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। খানিক আতঙ্ক মনে জাগলো ভাবলাম সবাই সমান না।
তবে নিখুঁত লিখায় লিপিবদ্ধ করেছেন কাইকর সাহেব বনানী কবরস্থান।
স্কুল মাস্টার আরাফাতের কয়েকবার একটা করে জুতা চুরি হওয়া।
এসআই রঞ্জিতেরও অবশেষে চানুর বাড়ি থেকে চানুকে গ্রেফতার করার সময় একটা জুতা চুরি হওয়ার লোক সম্মুখ হতে।
আশচর্য না? চোর একটা জুতা নিয়ে কি করবে? হ্যাঁ আশচর্য হলেও সত্যি। ঐ যে সাইকো রা কখন কি করে তা বলা মুশকিল।
তাদের মনের আনন্দের জন্য তারা অপরাধ করে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ‘Estacy’
আরো কিছু বলার ইচ্ছে হচ্ছে আসলে অনেক কিছুই বলার ইচ্ছে হচ্ছে তবে সব বলে দিলে গল্প পড়ার মজা থাকবে না। পাতা উল্টে ইন্টারেস্ট থাকবে না কি হবে এর পর? মনে প্রশ্ন জাগবে না।
তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ যারা ক্রাইম থ্রিলার উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন না তারাও একবার পড়ে দেখতে পারেন। আমি গেরেন্টি ভালো লাগবে।
আর যারা সাইকো থ্রিলার , ক্রাইম পছন্দ করেন তারা ত অবশ্যই পড়বেন।
আশা করি সবার ভালো লাগবে। অবশ্যই একবার হলেও বই টা পড়বেন।
ভালো লাগার উক্তি –
– মানুষ মরলেই সুখী। কারণ সেখানে নেই হিংসা, নেই মারামারি, নেই লড়াই।
প্রচ্ছদ – আমার মতে ৫ এ ৫
বনানী কবরস্থান লিখার ধরণ টাতেও ইঞ্চিত ধারণা করা যায় সাইকোলজির ছোঁওয়া। বই টি হাতে নিলেই বা দেখলেই তা উপলব্ধি করা যায়।
গল্পের রেটিং দিতে হলে আমার মতে –
১০ আউট অফ ৯.০৯
০.১ কাটার কারণ না বলি ,
সব কথা বলতে নেই। কিছু কথা নিজের মাঝে ই লুকিয়ে রাখতে হয়।
– নোভানা আফরোজ জেরিন।
বনানী কবরস্থান বই – pdf (ডাউনলোড)