হাঙর নদী গ্রেনেড pdf Download (সেলিনা হোসেন)

হাঙ্গর নদী গ্রেনেড বইটি একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস।

Hangor Nodi Grenade (Novel) by Selina Hossain book info:

book হাঙর নদী গ্রেনেড
Author
Publisher
type pdf
Edition 8th Edition, 2021
Number of Pages 111
ধরন  মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস
Language বাংলা

হাঙর নদী গ্রেনেড রিভিউ

১৯৮৭ সালে উপন্যাসটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন আবেদীন কাদের। প্রকাশ করে বাংলা একাডেমী। ইংরেজি নাম The Shark, The River and The Grenade. ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের কারণে বইটি দেশের সীমানা অতিক্রম করে। ২০০৫ সালে আমেরিকার শিকাগোতে ডকটন কম্যুনিটি কলেজে চার সেমিস্টার পড়িয়েছিলেন অধ্যাপক এমিলি ব্লক। তিনি বইটি নেট থেকে নামিয়েছিলেন।

প্যারিসের সরবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পাসকাল জিঙ্কও বইটি নেট থেকে নামিয়েছেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। তাঁর গবেষণার বিষয় সাউথ এশিয়ার সাহিত্য। এভাবে এই বই নানা দেশে ভ্রমণ করেছে। ভারতের কেরালা রাজ্যে মালয়ালাম ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।

তার পরও লেখকের তৃষ্ণার বাইরে যেতে পারেনি বইটি। প্রথম প্রকাশের ৩৮ বছর পরে আমি আবার এই উপন্যাসের পরিমার্জনা করছি। জানি না লেখকের নিজের ভেতর থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ কথা কি না। উপন্যাস লেখার নেপথ্য কথা প্রতিটি উপন্যাসের জন্যই ভিন্ন। অন্তত আমার ক্ষেত্রে এটি সত্যি।

এই উপন্যাসের খুদে পাঠক আট বছর বয়সী সুমাইয়া বুশরা ভোর। উপন্যাসটি পড়ার পরে ও আমাকে প্রশ্ন করেছিল, রইসের খবর কোথায়? আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ভেবেছিলাম, শহীদদের খবর খোঁজার জন্য আমাকে কি আরেকবার উপন্যাসটি লিখতে হবে? ততটুকু আয়ু কি পাব?

নামকরণের স্বার্থকতা : নাম টি একটু অদ্ভুত তাইনা?
উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের সাথেই যেন মিশে আছে এক নদী, যেই নদী মেয়েটিকে স্বপ্ন দেখায়, ভবিষ্যৎ এর স্বপ্নের জাল বুনতে শেখায়, গ্রেনেড এর অপর নাম মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের গর্বের ৭১, এক পাল হাঙর গোগ্রাসে গিলতে এসেছিলো আমাদের স্বপ্নের ৭১ কে।
নদী ও গ্রাম বাংলার শান্ত পরিবেশ এবং এক রাজ্য স্বপ্ন চোখে নিয়ে বেঁচে থাকা এক নারীর সাথে ৭১ এর চমৎকার মেলবন্ধন দেখানো হয়েছে এই উপন্যাসে।

চিরসবুজ এই বাংলার সবুজ মায়াময় শান্ত এক গাঁ হলদী গাঁ,
এখানে বেড়ে ওঠা গ্রাম্য এক কিশোরী বুড়ি র।

আশ্চর্য তার নাম বুড়ি!! বুড়ি কিন্তু মোটেও তার নাম কে বয়ে নিয়ে বেড়াতো না, রঙের মেলা বুড়ির মনে এক দিয়ে যেত গভীর বাসনা, সেই বাসনা উড়ে উড়ে বেড়াতো মাঠে ঘাটে, বনে বাদাড়ে, এক গাঁ থেকে আরেক গাঁয়ে
বুড়ির মন রেল গাড়ির সাথে ঝিক ঝিক করে ছুটে যেন,
নদীর পালতোলা নৌকোর সাথে দুলতে দুলতে রওনা দিত এক অজানার দেশে,
এই বুড়ি কোনোদিন ও থামতে চাইতো না।ছুটতে চাইতো, প্রকৃতির রঙ নিয়ে খেলতে চাইতো কিন্তু কখনোই তা সম্ভব হয়নি, এই হলদী গাঁয়ের ছোট্ট একটু গন্ডি তেই বুড়ির পার হয়ে যায় শৈশব, কৈশর, যৌবনকাল, কিন্তু বুড়ি তার গন্ডি আর ভাংগতে পারেনা।

বিয়ে হয়ে যায় তার চেয়ে অনেক বড় চাচাতো ভাই গফুরের সাথে, বুড়ির স্বপ্ন মাটির তলায় চাপা পরে যায়, তার অবারিত উচ্ছলতার সঙ্গী হিসেবে জলিল কে পেতে বুড়ির হৃদয়ে এক গোপন আকাঙ্ক্ষা পেয়ে বসে কিন্তু বুড়ি যে নিরুপায়।

তবুও সেই গফুর বুড়ির যৌবনের সঙ্গী হিসেবে নিজেকে আকুল করে বুড়ির জন্য মেলে দেয় কিন্তু তাও গফুর বুড়িকে ছুঁতে পায়না, বুড়ি একলা একলাই প্রকৃতিকে নিয়ে খেলে যায়।

দুরন্ত এই বুড়ি এক সময় সন্তানের জন্য আকুল হয়ে ওঠে, মাতৃত্ব লাভের তৃষ্ণায় বুড়ির প্রাণ খা খা করে তাও সন্তান পায়না বুড়ি, দীর্ঘ ৮ বছর পর বুড়ির গলার কাটা হয়ে জন্ম নেয় রইস।

সন্তান কি মায়ের জীবনে কাঁটা হতে পারে? এই পরম চাওয়ার সন্তান শেষ পর্যন্ত বুড়ির জীবনে কাঁটা হয়ে থাকেনি, বুড়ি তার সন্তানের রক্তের উপর পারা দিয়ে নিজেকে হয়তো বলতে পেরেছিলো হ্যাঁ আজ আমি স্বার্থক আমার রইস কে জন্ম দিয়ে।

হাঙর নদী গ্রেনেড উপন্যাসের চরিত্র

মুল চরিত্র: বুড়ি,
অন্যান্য চরিত্র: গফুর, সলীম , কলীম, রইস (বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী), রমিজা.

ধরন : মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস

আমার পড়া লেখিকার দ্বিতীয় উপন্যাস এটি,
লেখিকা নিপুণ হাতে গ্রাম্য এক কিশোরীর স্বপ্ন গুলো কে রঙিন পাতায় বুনতে পেরেছেন।বিয়ে সন্তান লাভের মত বিষয়গুলো খুব বাস্তব ভাবে ফুটে ওঠে এই উপন্যাসে, মাতৃত্বের পরম চাওয়া উপন্যাস টিকে বেদনাদায়ক করে তুলেছে এবং শেষ হয় উপন্যাসটি রইস কে দিয়ে, বুড়ির গর্বের সন্তান রইস।

আমিও যেন চলে গিয়েছিলাম সেই হলদী গাঁয়ে বুড়ির খুব কাছে,
কাছ থেকেই প্রাণে ধারণ করেছি বুড়ির মিষ্টি স্বপ্ন গুলোকে।।

বই টি কি সংগ্রহে রাখার মত?
সেলিনা হোসেনের চমৎকার এই উপন্যাস টি একবার হলেও সবার পড়া উচিত।

হাঙর নদী গ্রেনেড উপন্যাসের বিষয়বস্তুঃ

book review/কাহিনী সংক্ষেপ: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যতগুলো উপন্যাস লেখা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি গল্প হলো এই হাঙর নদীর গ্রেনেড।

মুল চরিত্রে বুড়ি শব্দ টা দেখে হয়তো মনে হতে পারে এটা কোন বয়স্ক ব্যাক্তির জীবনের গল্প। কিন্তু আসলে সেটা সত্যি না।

বুড়ি হচ্ছে গ্রামে বেড়ে ওঠা এক কিশোরীর নাম যার কিনা এই নাম পছন্দ না হলেও তাকে এই নামে ডাকতে ডাকতে, একসময় অপছন্দের নামটাই স্থায়ী হয়ে গেছে।

সে গ্রামে বাস করা খুবই দুরন্ত মেয়ে, যার সারাদিন কাটে দস্যিপনা করে। এই মাঠ থেকে ঐ মাঠে, রেললাইনের ধারে, পাড়ায় পাড়ায় একা ঘুরে বেড়িয়ে যার দিন দিব্যি কেটে যায়। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একসময় দিন শেষে মাস তারপর বছর ঘুরে বুড়ির বয়স বাড়তে থাকে।

গ্রামে সাধারনত মেয়ের বয়স বাড়লে আশেপাশের লোকজনের চোখে পড়তে থাকে সেই মেয়ে। তাই বুড়ির ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হলোনা।

তাই কিছুদিনের মধ্যেই তার বিয়ে সম্পন্ন হলো আপন চাচাতো ভাই গফুরের সাথে। তবে বুড়ি ছিলো গফুরের ২য় বউ। ১ম বউ মারা যায় তাই আগের ঘরের ২ টা ছেলে আর নতুন বউ বুড়িকে নিয়ে শুরু হয় গফুরের নতুন জীবন।

যতোই দিন যায় ততই গফুর বুঝতে পারে সে প্রথম বউ এর থেকে বুড়ি কে বেশী ভালোবাসে। সে মনে করো আগের কথা,কম বয়সে যখন তার সংসারের প্রতি কোন মায়া ছিলোনা এমনকি ছেলে হওয়ার পরেও অতো গুরুত্ব দেয়নি সংসারে কিন্তু বুড়ির ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, সে সবসময় বুড়িকে খুশি করার জন্য ওর মনের উপর কোন জোর করেনা। কিন্তু তারপরও গফুরের মনে অজানা এক আতঙ্ক ভর করে, সে বুঝি বুড়িকে বুঝতে পারেনা।

কিন্তু আসলে বুড়ি সবসময়ই ব্যাতিক্রম,কঠিন মনের, সংসার জীবনের মায়া তাকে অতোটা টানেনা তাই তার কারো প্রতি নালিশ নেই। যেভাবে রাখা হয়েছে সেভাবেই থাকে সে কিন্তু মাঝে মাঝে বুড়ি উদাস হয়ে দুর আকাশে তাকিয়ে থাকে আর এই উদাসীনতা গফুরের কষ্টের কারন।

এভাবে তাদের সংসার জীবন এগোতে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বুড়ি অনুভব করে, তার একটা সন্তান প্রয়োজন।বুড়ি বুঝতে পারে,নারীর টান বলে একটা কথা আছে নিজের সন্তানের উপরে আর কোন সুখ নেই।

কিন্তু অনেক প্রতীক্ষার পরেও সে কোন সন্তান আসার আভাষ পায়না। পরে অনেক অপেক্ষার পরে তার কোল জুড়ে আসে তার একমাত্র ছেলে সন্তান।

এই সন্তান কে নিয়ে বুড়ির মায়া মমতার শেষ নাই। সারাক্ষণ যত্নে রাখে। কিন্তু সুখ হয়তো বেশীদিন কপালে থাকেনা তাই বুড়ির ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হলোনা। কিছুদিন পরেই বাচ্চার মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলো বুড়ি।

আস্তে আস্তে সে বুঝতে পারলো তার আদরের সন্তান আর দশটা বাচ্চার মতো স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠছেনা, অবশেষে বুঝতে পারে বুড়ি,ছেলে বোবা হয়েছে তাই কোনকিছুতেই বাচ্চার কোন প্রতিক্রিয়া নেই। এদিকে গফুরের বয়স বাড়ার জন্য অসুখ এসে ভর করাই একসময় সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। তাই বুড়ির জীবনটা হঠাৎ করেই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।

এরপর সে তার আগের ঘরের ২ ছেলে সলিম কলিম আর নিজের ছেলে রইস কে নিয়ে দিন কাটাতে থাকে। সলিম বড় হওয়ার সাথে সাথে সংসারের দ্বায়িত্ব নিজে বুঝে নেই। একসময় বুড়ি সলিমকে তাগিদ দেয় বিয়ে করে বউ আনার জন্য এবং সলিম মায়ের কথায় প্রথমে রাজি না হলেও পরে মত দেয় বিয়ের জন্য।

হঠাৎ দেশের অবস্থা খারাপ হতে থাকে, চারপাশে গুন্ঞ্জন চলে অধিকার আদায়ের জন্য,দেশে যুদ্ধ শুরু হবে। বুড়ির মনে অজানা আতঙ্ক ভর করে। তারপর যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় বুড়ির বড় ছেলে সলিম সিদ্ধান্ত নেয় যুদ্ধে যাবে, কলিম কে সম্পুর্ণ পরিবারের দ্বায়িত্ব দিয়ে চলে যায় সে যুদ্ধে। কলিম কি তার দ্বায়িত্ব পালন করতে পারবে??? নাকি হায়েনাদের হাতে তার জীবন দিতে হবে??

এমন সময় গ্রামের মানুষগুলো নিজ নিজ ভিটে মাটি ছেড়ে পালাচ্ছে, বুড়ি কে অনেকবার বলার পরেও সে তার নিজের ভিটে বাড়িতেই থেকে যায়। আশেপাশের যুবকরাও মুক্তি বাহিনী তে যোগ দিয়েছে। তারপরেই হঠাৎ একদিন দুই মুক্তি এসে বুড়ির বাড়িতে আশ্রয় গ্রহন করে পাকিস্তানিদের তাড়া খেয়ে।

ওদের আশ্রয় দেয়ার পরপরই পাকিস্তানিরা বুড়ির ঘরের দরজা ধাক্কাতে থাকে। কি করবে এখন বুড়ি?? নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য মুক্তিদের পাকি র হাতে তুলে দিবে?? নাকি অন্য কোন চমৎকার দৃশ্য অপেক্ষা করছে?? আর সলীম কি আদৌ যুদ্ধ শেষে ফিরতে পারবে?? এই উত্তর গুলো পেতে আপনাকে পড়তে হবে বইটি।।

book হাঙর নদী গ্রেনেড pdf Download সেলিনা হোসেন
book হাঙর নদী গ্রেনেড pdf Download সেলিনা হোসেন

গ্রন্থ- হাঙর নদী গ্রেনেড সমালোচনাঃ

হাঙর নদী গ্রেনেড উপন্যাসে প্রতিফলিত মুক্তিযুদ্ধকালীন বাস্তবতা/পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ বৃহস্পতিবার রাতে বইটা হাতে নিয়েছি পড়ার জন্য, একটার পর একটা ঘটনা আমাকে পাতার পর পাতা পড়িয়ে নিয়ে গেছে, তারপর হঠাৎ করেই বইটা শেষ হয়ে গেলো। আমার চোখে তখন পানি। এতোবড় আত্নত্যাগ ও কি মানুষ করতে পারে??? তারপর যখন রুমমেটদের থেকে শুনি বইটি নাকি সত্যি ঘটনার অবলম্বনে লেখা। তখন আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।

যশোর এর কোন এক গ্রামে নাকি মুক্তিযুদ্ধের সময় এরকম ই আত্নত্যাগ করেছিলো কোন দুঃখিনী মা।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়া আমার মনে দাগ কাটা,আনিসুল হকের মা উপন্যাসের পরে এখন নতুন করে যোগ হলো সেলিনা হোসেনের “হাঙর নদী গ্রেনেড”।।। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

হাঙ্গর নদী গ্রেনেড মুভি – Hangor Nodi Grenade movie download

 হাঙর নদী গ্রেনেডউপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর পর্ব

হাঙ্গর নদী গ্রেনেড উপন্যাসের লেখক কে?

হাঙর নদী গ্রেনেড বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন রচিত বাংলা উপন্যাস.

হাঙর নদী গ্রেনেড এর পরিচালক কে?

হাঙর নদী গ্রেনেড চলচ্চিত্রটি ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। ছায়াছবিটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম।

hangor nodi grenade book pdf links

সত্যি ঘটনা অবলম্বনে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এই বইটিতে এক সাধারণ গ্রামের কিশোরীর বড় হয়ে ওঠা এবং দেশের স্বাধীনতার জন্যে অতুলনীয় আত্মত্যাগের কথা বর্ণিত হয়েছে।

উপন্যাসের ভাষা খুবই প্রাঞ্জল এবং ঘটনা প্রবাহ পাঠকের মনে অপরিসীম আবেগ সৃষ্টি করবে।

হাঙর নদী গ্রেনেড free pdf Download :- Link :-1

Drive pdf Download link1 or Read This Full BookLink 2Link 3

আরো দেখুন- হাঙর নদী গ্রেনেড রকমারি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *