Technology - টেক গাইডOthers

ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার তৈরি করার নিয়ম

ট্রাইকো কম্পোষ্ট

pic ট্রাইকো কম্পোস্ট সার
pic ট্রাইকো কম্পোস্ট সার

ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার কি?

ট্রাইকোডার্মা নামক এক ধরনের উপকারী ছত্রাকের সাহায্যে বিভিন্ন জৈব উপাদান যেমন;কাঠের গুড়া,ভুট্টার ব্রান বা ভূষা,মুুুরগীর বিষ্ঠা,গোবর,কচুরিপানা,শাক-সবজীর খোঁসা,চিটাগুড়,নীমপাতা ইত্যাদি নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ৪০-৪৫ দিন জমা রেখে পচিয়ে যে বিশেষ ধরনের কম্পোষ্ট সার প্রস্তুত করা হয় তাকেই ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার বলে।

pic ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরি করার নিয়ম
pic ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরি করার নিয়ম

ট্রাইকো-লিচেট কি? 

ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার প্রস্তুত হওয়ার সময় যে পাত্রে বা হাউজে সব উপাদান মেশানো হয় তার তলায় বিশেষ ধরনে এক তরল পদার্থ জমা হয়।এই তরল পদার্থকেই ট্রাইকো-লিচেট বলা হয়।এটি বালাই নাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

 ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার কিভাবে সংরক্ষণ করতে হয়?

 ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার সাধারণত বায়ুনিরোধক ব্যবস্থায় ১৫% থেকে ১৬% আদ্রতা বজায় রেখে সকল গুনাগুন অক্ষুন্ন রেখে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

জমিতে ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করার নিয়ম :

প্রতি শতাংশ জমিতে ৮ থেকে ১০ কেজি হারে ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করা ভালো। তবে জমির ঊর্বরতা শক্তি এবং ফসলভেদে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ব্যবহারের মাত্রা কমবেশী হতে পারে। গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায় যে শতাংশ প্রতি ৮ থেকে ১০ কেজি পরিমান ট্রাইকো-কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করে অনেক ধরনের শাক-সবজি জাতীয় ফসল যেমন;পটল, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ডাটা, শসা ইত্যাদিতে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। সবজি ছাড়াও পেয়ারা, বরই, পেঁপে, কলা, আম ইত্যাদি ফল চাষেও ট্রাইকো-কম্পোস্ট সার ব্যবহার করা যায়। ট্রাইকো-কম্পোস্ট সার প্রয়োগকৃত জমিতে অনুমোদিত রাসায়নিক সারের ২৫% কম প্রয়োগে ফসলের ফলনের কোন পার্থক্য দেখা যায় না। ফসল লাগানোর ২০-২৫ দিন পর থেকে ২% হারে ট্রাইকো-লিচেট ১৫ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।এতে করে ফসলের রোগ বালাই কম হবে।

ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহারের উপকারিতা :

  • ট্রাইকো কম্পোষ্ট ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় ।
  • ট্রাইকো কম্পোষ্ট ব্যবহারে উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • বীজ তলায় এটি সবজির চারা মরা রোগ দমন করে ।
  • মাঠে বিভিন্ন সবজি ফসলে ব্যবহার করে দেখা গেছে এটি শিকড়ের গিট এবং ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া জনিত ঢলে পড়া রোগ দমন করে।
  • জমিতে গন্ধক, দস্তা প্রভৃতির ঘাটতি পূরণ করে এবং গাছের বৃদ্ধি কারক হরমোন সরবরাহ করে থাকে।
  • জমিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের আধিক্য জনিত কোন বিষক্রিয়া সৃষ্টি হলে ট্রাইকো কম্পোষ্ট ঐ বিষক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
  • মাটির পানি ধারন ক্ষমতা বাড়ায় ।
  • মাটির গঠন উন্নত করে ।
  • অধিক ফসল উৎপাদিত হয় ।
  • উৎপাদিত ফসলের গুণগত মান ভাল হয় ।
  • মাটির পিএইচ ঠিক রাখে ।
  • জমিতে হাল-চাষ করতে সহজ হয়।

ট্রাইকোডার্মা কি?

ট্রাইকোডার্মা প্রজাতিটি 1794 সালে প্রথম বর্ণনা করা হয়েছিল এবং এটি যৌন অবস্থার সাথে হাইপোক্রিয়ার একটি লিঙ্ক উপস্থাপন করে।  যদিও ট্রাইকোডার্মা বা হাইপোক্রিয়া গণের মধ্যে শ্রেণীবিভাগ সীমিত আকারের অক্ষর ব্যবহার করে, ট্রাইকোডার্মা গণের মধ্যে সমস্ত প্রজাতির সঠিক সনাক্তকরণের জন্য একটি অনলাইন শনাক্তকরণ টুল তৈরি করা হয়েছিল।  ট্রাইকোডার্মা প্রজাতির একটি গ্রুপ বর্ণনা করা হয়েছে যেগুলি বিভিন্ন পরিবেশগত অবস্থার সাথে অভিযোজন, বিভিন্ন জৈব অণু বা যৌগগুলির বিপাক এবং দ্রুত বৃদ্ধির হার সহ আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলি ভাগ করে।  এই বিপাকীয় বৈশিষ্ট্যগুলি এই ট্রাইকোডার্মা প্রজাতিগুলিকে ইকোস্ফিয়ারের প্রধান পচনকারী হিসাবে রাখে এবং শিল্পের উদ্দেশ্যে তাদের বিপাক শোষণের জন্য গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।  প্রকৃতপক্ষে, ট্রাইকোডার্মা প্রজাতি বিভিন্ন জৈব প্রযুক্তিগত প্রয়োগে প্রয়োগ করা হয়েছে যেমন একটি জৈবিক নিয়ন্ত্রণ, জৈব সার, শিল্প এনজাইমের উৎস এবং প্রোটিন উৎপাদক হিসাবে।  বর্তমান অধ্যায়টি শিল্প ট্রাইকোডার্মা প্রজাতির পরিচিতি এবং ওয়াইন ও বিয়ার শিল্পে তাদের প্রয়োগ উপস্থাপন করবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ট্রাইকো কম্পোষ্ট সারের উৎপাদন এবং ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে করে বাংলাদেশ অর্গানিক ফুড উৎপাদনে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে।ট্রাইকো কম্পোস্ট সারের উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরাও এটি ব্যবহারে ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *