OthersTechnology - টেক গাইড

সিগারেট ছাড়ার উপায় বা ধূমপান ছাড়ার উপায় সমুহ

সিগারেট ছাড়বো কিভাবে?

pic সিগারেট ছাড়ার উপায়
pic সিগারেট ছাড়ার উপায়

আমরা জানি যে সিগারেট খাওয়া (পান করা) আর বিষ খাওয়া প্রায় একি কথা।পার্থক্য শুধু একটি আপনাকে সাথে সাথে শেষ করেদিবে,আরেকটি শেষ করবে ধিরে ধিরে।সিগারেট খাওয়ার ফলে বা ধূমপান করার ফলে মানব শরিরে বাসা বাঁধে মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ হাজারো রকমের রোগ বালাই।সিগারেট খাওয়ার কুফল বা ধূমপান করার কুফল সমূহ শুধু ধূমপায়ী নিজেই ভোগ করেনা,ভোগ করে তার পরিবারের সদস্যরাও।বলা হয়ে থাকে ধূমপায়ীর দশটা সিগারেট খাওয়ার ফলে তার পাশে থাকা অধূমপায়ীর একটি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি হয়ে থাকে।এছাড়া অর্থের অপচয় তো আছেই।

সিগারেট খাওয়ার বা ধূমপানের কুফল সম্পর্কে আমরা এতসব বিষয় জানার পরেও আমরা অনেকেই নির্দ্বিধায় ধূমপান করে যাচ্ছি।আবার আমাদের মাঝে অনেকেই সিগারেট খাওয়া ছাড়তে চেয়েও পেরে উঠছিনা।এটাই শেষ সিগারেট খাওয়া বলে বলে প্রায় প্রতিদিনই অনেকেই ধূমপান করছে।ফলে অনেকেই হারিয়ে ফেলছে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস।

সিগারেট কেন নেশায় পরিনত হয়:

পুরুষ বা মহিলা যে কেউই ধূমপান বা সিগারেট খাওয়া শুরু করে নিকোটিনে আসক্ত হয়ে পড়তে পারে।  বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা কিশোর বয়সে ধূমপান শুরু করে তাদের সারাজীবনের জন্য ধূমপান অভ্যাসে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।কেউ যখন ধূমপান শুরু করবে তখন সে যত কম বয়সী হবে, নিকোটিনে আসক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তার জন্য তত বেশি থাকে।মূলত সিগারেট খাওয়া বা ধূমপান করার শুরুটা হয় বন্ধু বান্ধবের মাধ্যমেই।এ ছাড়া ছোটদের সামনে পরিবারের বড় কেউ সিগারেট খেলে বা ধূমপান করলেও ছোটদের নিকট ব্যপারটা নরমালাইজ হয়ে যায় যা পরবর্তীতে বিরূপ প্রভাব ফেলে।

ধূমপানের ফলে আমাদের মস্তিষ্কে নিঃসরিত হয় ডোপামিন নামক হরমোন যা আমাদেকে শান্ত করে বা  আমাদের ভালো বোধ করায় এবং মনোযোগ বাড়াতেও সাহায্য করে।এর ফলে ধূমপায়ীরা মনেকরেন যে তাদের দুশ্চিন্তা কমছে। কিন্তু মূলত সিগারেট ছাড়া থাকার ফলে সৃষ্ট টেনসনই কেবল ধূমপানের ফলে কমে।ধূমপায়ীর কাজ-কর্ম  ও পরিবার সম্পর্কিত দুশ্চিন্তা কিন্তু সত্যিকার অর্থে খুব একটা কমে না।কমলেও তা খুবই সাময়িক সময়ের জন্য কমে। আবার অপর দিকে ধূমপানের ফলে আমাদের রক্তচাপ এবং হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। ফলে স্ট্রেস কমছে এই ভাবনার আড়ালে কিন্তু আমরা দেহের ক্ষতিই করে চলেছি।

সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা নিকোটিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক ফুসফুসের মাধ্যমে সহজেই রক্তে শোষিত হয়।  সেখান থেকে নিকোটিন দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।নিকোটিন অল্প সময়ের জন্য আনন্দদায়ক অনুভূতি সৃষ্টি করে।যেহেতু শরীর নিকোটিনের সাথে ধিরে ধিরে খাপ খেয়ে যায়,ফলে ধূমপায়ীরা ধূমপান করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।এভাবেই সিগারেট খাওয়া বা ধূমপান করা ধিরে ধিরে আসক্তিতে পরিণত হয়।

সিগারেট ছাড়ার উপায় বা ধূমপান ছাড়ার উপায় সমুহ:

  • সিগারেট খেতে মনচাইলেই চুইংগাম চিবুতে পারেন প্রতিবারই।
  • সিগারেট ছাড়ার চেস্টারত অবস্থায় প্রচুর পানি পান করবেন।
  • অনেকের মতে আদা খাওয়া সিগারেট ছাড়তে সাহায্য করে।
  • মধু সিগারেট আসক্তি কমাতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত ওটস খেলে সিগারেট আসক্তি কমে যায়।
  • আংগুরের জুস ধূমপান আসক্তি কমাতে ও ফুসফুস সুস্থ করতে সাহায্য করে।
  • বেশি পরিমাণে ফল ও শাক সবজি খেতে হবে।
  • অধূমপায়ী বন্ধু বাড়াতে হবে।
  • ধূমপায়ী বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো কমাতে হবে।
  • ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।
  • সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
  • “না”-মানে না,মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।
  • ইউটিউবে সিগারেটের ক্ষতি বুঝানোর জন্য অনেক ভিডিও আছে,যেগুলো সিগারেটের ব্যপারে আপনাকে ডিমোটিভ করতে সাহায্য করতে পারে।
  • যে সময়গুলোতে সিগারেট বেশী খেতে মন চায় সেই সময়গুলো কে চিহ্নিত করে উক্ত সময় গুলোতে অন্য কোন কাজ করার চেষ্টা করতে হবে।
  • সর্বশেষ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

সিগারেট এমন এক দ্রব্য যার মোড়কেই এর ক্ষতির সতর্কবার্তা উল্লেখ থাকে।তার পরও আমরা একমাত্র আসক্তির কারনে এই দ্রব্য গ্রহন করে থাকি।সিগারেট খাওয়া বা ধূমপান করার মাধ্যমে আমরা শুধু আমাদের নিজের ক্ষতি করছিনা,একি সাথে ক্ষতি করছি আমাদের আশেপাশের মানুষদের,পরিবারের সদস্যদের এবং অনেক ক্ষেত্রে অনাগত ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও।তাই আমাদের উচিৎ শুধু নিজের নয়,সকলের মোঙলের কথা চিন্তা করে এই ভয়ানক আসক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *